আফ্রিকার দেশ সেনেগাল প্রথম বারের মত বিশ্বকাপে এসেছিল ২০০২ সালে। সবাইকে চমকে দিয়ে সেবার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল দলটি। এরপর ১৬ বছরের দীর্ঘ বিরতি। দলটির বিশ্বকাপ প্রত্যাবর্তন হলো রাশিয়ায়। তবে চমকে দেয়ার স্বভাবটা যেন রয়েই গিয়েছে সেনেগালিজদের ধমনিতে। এবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা হারিয়ে দিয়েছে শক্তিশালী দল পোল্যান্ডকে। যদিও শেষ মুহূর্তে পোলিশদের গোল ম্যাচে অন্যরকম কিছুর আভাস দিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছে সেনেগাল।
এবারের বিশ্বকাপ বেশ কিছু ইতিহাসে পরিবর্তন দেখেছে। যেমন- ১৯৮২ সালের পর প্রথমবারের মত জার্মানি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হেরেছে। তবে পোল্যান্ড পারেনি নিজেদের প্রথম ম্যাচের ইতিহাসে পরিবর্তন আনতে। ১৯৭৪ সালে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপে প্রারম্ভিক ম্যাচে জিতেছিল দলটি। তারপর চলতি বিশ্বকাপ সহ এটি পোল্যান্ডের ষষ্ঠ আসর। তবে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আর জেতা হয়ে ওঠেনি দলটির।
তবে মঙ্গলবারের এই ফলাফলের জন্য পোলিশ ফুটবলাররা নিজেদের দুষতেই পারে। দুইটি গোলই যে তারা খেয়েছে নিজেদের দোষে। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে দুর্দান্ত একটি আক্রমণে ওঠে সেনেগাল। সতীর্থের বাড়ানো বলে শট নেন মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গুইয়ে। তবে তা পোল্যান্ড অধিনায়ক থিয়াগো সিওনেকের পায়ে লেগে জড়িয়ে যায় জালে। তিনিই বিশ্বকাপে প্রথম আত্মঘাতী গোল করা পোলিশ খেলোয়াড়। অর্থাৎ, এর আগে বিশ্বকাপে কখনই আত্মঘাতী গোল হজম করতে হয়নি পোলিশদের।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ গুছিয়ে আক্রমণ করা শুরু করে পোল্যান্ড। ৪৯ মিনিটে সেনেগালের ডি-বক্সের বাইরে একটি ফ্রি-কিক পেয়ে যায় তারা। তবে এখানে বাধা হয়ে দাঁড়ান সেনেগালের গোলরক্ষক খাদিম এন’দিয়ায়ে। পোলিশ তারকা রবার্ট লেভাদোস্কির নেয়া দারুণ ফ্রি কিকটি রুখে দেন তিনি।
তবে ম্যাচে দ্বিতীয় ভুলটি করতে দেরি করেনি পোল্যান্ড। তা থেকে ম্যাচের ৬০ মিনিটে তা থেকেই দ্বিতীয় গোলটি খেয়ে বসে দলটি। পোল্যান্ড আক্রমণে উঠেছিল। তবে সেনেগালের অর্ধ থেকে বল ফেরত আসে। পোলিশ মিডফিল্ডার ক্রাইচোইয়াক লং পাসে বল ফেরত দেন নিজেদের অর্ধে থাকা তরুণ ডিফেন্ডার বেদনারেককে। তিনি বল ধরার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। সে সময়ই সেনেগালের ফরোয়ার্ড এম’বায়ে নিয়াং অরক্ষিত অবস্থায় বল দখলে চলে আসেন। পোল্যান্ডের গোলরক্ষক ডিবক্সের বাইরে চলে এসেছিলেন। তার মাথার উপর দিয়ে চিপ করে বল পাঠিয়ে দেন নিয়াং। বল জড়িয়ে যায় পোল্যান্ডের জালে। এটিই ২৩ বছর বয়সী নিয়াংয়ের প্রথম আন্তর্জাতিক গোল।
পোলিশ মিডফিল্ডার ক্রাইচোইয়াক অবশ্য ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেছিলেন। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে ফরোয়ার্ড কামিল গ্রোসিকির নেয়া ফ্রি কিক থেকে একটি গোল পরিশোধ করেন তিনি। এই বিশ্বকাপে বেশ কিছু শেষ মুহূর্তের গোল হয়েছে। তাই সমর্থকেরাও আশায় বুক বেধেছিলেন আরেকটি গোলের। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বিজয়ীর মালা গলায় পড়েই মাঠ ছাড়ে সেনেগাল।
মঙ্গলবারের শেষ ম্যাচে দুই প্রতিপক্ষ মিশর ও রাশিয়া। সেন্ট পিটার্সবার্গে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় শুরু হবে ম্যাচটি।